শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:২৬ অপরাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

কক্সবাজারে পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহ শুরু হচ্ছে ১৭ ডিসেম্বর

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২২

এম.এ আজিজ রাসেল:

“সময়মতো নিলে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্যের হবে উন্নতি” এই প্রতিপাদ্যে কক্সবাজারে আগামী ১৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে পরিবার পরিকল্পনা সেবা ও প্রচার সপ্তাহ। আগামী ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে এই সেবা ও প্রচার সপ্তাহ। বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় আয়োজিত এ্যাডভোকেসি সভায় এ তথ্য জানানো হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান। বক্তব্যে তিনি বলেন, “দেশে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার আগের তুলনায় অনেক কমেছে। বেড়েছে গড় আয়ু। তাই শুধু সেবা দিলে হবে না, সেবা নিয়ে গ্রহীতারা সন্তুষ্ট কিনা তা বিবেচনা করতে হবে। বাল্য বিবাহের কুফল নিয়ে স্কুল পর্যায়ে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে অধিক কাজ করতে হবে জন্মনিয়ন্ত্রণে। শিশুদের টিকা প্রদানে বিশ্বে সাফল্য অর্জন করা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ এগিয়ে। এ জন্য এ্যাওয়ার্ডও পেয়েছে প্রধানমন্ত্রী।”

পরিবার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেয়ে সচেতনতা বাড়ানোর তাগিদ দেন বক্তারা।

সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ ফরহাদ হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক জাহিদ ইকবাল সদর হাসপাতালের গাইনী কনসালটেন্ট ডাঃ খাইরুন্নেছা মুন্নী, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল, ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকারিয়া।

এতে স্বাগত বক্তব্য দেন পরিবার পরিকল্পনা কক্সবাজারের উপপরিচালক ডাঃ পিন্টু কান্তি ভট্টাচার্য্য। তিনি বলেন, “সপ্তাহব্যাপী পরিবার পরিকল্পনা সেবা, স্বাভাবিক ও জরুরি প্রসব সেবা, প্রসব পরবর্তী পরিবার পরিকল্পনা সেবা, গর্ভবতী সেবা, নবজাতক ও শিশু সেবা, প্রজননস্বাস্থ্য সেবা এবং কৈশোরকালীন স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সেবা দেওয়া হবে।”

সভায় জানানো হয়, “পরিকল্পনার মাধ্যমে পরিবারের সার্বিক মঙ্গল ও উন্নতিসাধন করাই পরিবার পরিকল্পনার লক্ষ্য। স্বামী-স্ত্রী মিলে আলোচনা করে তাদের আয় ও সামাজিক অবস্থার সাথে মিল রেখে কখন সন্তান গ্রহণ করবেন এবং কতগুলো সন্তান নেবেন, দু’টি সন্তানের মাঝে কতদিনের বিরতি দিবেন এবং সেই অনুযায়ী যথাযথ পদ্ধতি অবলম্বন করাই হলো পরিবার পরিকল্পনা। পরিবার পরিকল্পনার সকল সেবা সম্পর্কে জেনে বুঝে পছন্দমত সেবা গ্রহণ করলে তা পুরুষ বা নারীর পরিবারের এবং দেশের জন্য যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে আসে। পরিবার পরিকল্পনায় বিনিয়োগ হল উন্নয়নের ‘বেস্ট বাই’ যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে ত্বরান্বিত করে। পরিবার পরিকল্পনায় বিনিয়োগ অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ রোধ করে এবং মা ও শিশু মৃত্যু কমাতে সাহায্য করে যা দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যবান, কর্মক্ষম জাতি গঠনে সহায়তা করে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যু ২০৩০ সালের মধ্যে ৭০-এ নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত রয়েছে, অপরদিকে ২০১৯ সালে কায়রোতে অনুষ্ঠিত আইসিপিডি-২৫ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সকল দেশ তিন শূন্য: ‘মাতৃমৃত্যুর শূনা যার নারীর প্রতি সহিংসতা- শূন্য। এবং অপূর্ণ চাহিদার হার শূন্য’- অর্জন করার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছে। এ তিন শূন্য অর্জনে অন্যতম বড় বাঁধা বাল্যবিয়ে। বাংলাদেশে বিয়ের আইনসম্মত বয়স মেয়েদের ১৮ বছর ও ছেলেদের ২১ বছর হলেও বিডিএইচএস ২০১৭-১৮ অনুযায়ী ২০-২৪ বছর বয়সী নারীদের শতকরা ৫৯% এর বিয়ে ১৮ বছর বয়সের আগেই হয়ে যায় যা বিশ্বে চতুর্থ নিম্নতম অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশের ১৫-১৯ বছরের কিশোরীদের ২৮% গর্ভবর্তী হয়, ফলে তাদের নানাবিধ অনাকাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হয়, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। বাল্য বিয়ে, কৈশোরকালীন মাতৃত্ব, প্রজননতন্ত্রের সংক্রমণ ইত্যাদি কারণে কিশোরী মেয়েরা স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে থাকে। কৈশোরে গর্ভধারণের ফলে কিশোরীদের গর্ভস্থ শিশুর বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়া, অপরিণত শিশু বা মৃত শিশু প্রসব, কম জন্ম ওজনের শিশু জন্মলাভ থেকে শুরু করে প্রসবকালে ও প্রসব পরবর্তী সময়ে মৃত্যু ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। এসব স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের রয়েছে প্রয়োজনীয়। ‘পরিবার পরিকল্পনা জীবন বাঁচায়” সেবার ব্যবস্থা। আর এবারের সেবা ও প্রচার সপ্তাহে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর সামগ্রিকভাবে পরিবার পরিকল্পনা, মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে গ্রহণ করেছে বিশেষ পরামর্শ প্রদান ও স্বাস্থ্যসেবার আয়োজন। আসুন, সেরা গ্রহণ করি, যারা সেবা নিতে আসছে না তাদের কাছে সেবার বার্তা পৌঁছে দেই এবং বালাবিয়ে ও অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণের কুফল ও করণীয় সম্পর্কে সকলকে সচেতন করে তুলি।”


আরো খবর: