শিরোনাম ::
বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৫ পূর্বাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

ওয়াগনারের সহায়তা চাইল নাইজারের জান্তা

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: রবিবার, ৬ আগস্ট, ২০২৩
ওয়াগনারের সহায়তা চাইল নাইজারের জান্তা


নিয়ামে, ০৬ আগস্ট – নাইজারে ক্ষমতা দখলের পর আজকের (রোববার) মধ্যে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে ক্ষমতায় পুনর্স্থাপন করতে হবে, নয়ত তাদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালানো হবে বলে আফ্রিকা অঞ্চলের ১৫ দেশের জোট দ্য ইকোনমিক কমিউনিটি অব ওয়েস্ট আফ্রিকা (ইকোওয়াস) হুমকি দেয়। এর প্রেক্ষিতে দেশটিতে সামরিক অভিযানের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে এ থেকে রক্ষা পেতে রাশিয়ান ভাড়াটে যোদ্ধা ওয়াগনারের দ্বারস্থ হয়েছে নাইজারের জান্তা।

এর আগে গত ২৬ জুলাই কোনো রক্তপাত ছাড়াই প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে অবরুদ্ধ করে নাইজারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনীর একাংশ। তবে তাদের এ অভ্যুত্থানকে ভালোভাবে নেয়নি ইকোয়াস। জোটটি গত সপ্তাহে হুমকি দেয়। আর এই সামরিক অভিযানের আশঙ্কা থেকে রাশিয়ার কুখ্যাত ভাড়াটে সেনাবাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের সহায়তা চেয়েছে নাইজারের অভ্যুত্থান নেতা জেনারেল সালিফু মুডি।

শনিবার বার্তাসংস্থা এপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মালিতে যাওয়ার পর জেনারেল সালিফু মুডি সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দেন। তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, নাইজারকে ‘নতুন লিবিয়া’ হতে আটকাতে যা প্রয়োজন তাই করবেন তারা।

আফ্রিকান ১৫ দেশের জোট ইকোয়াসের সামরিক প্রধানরা গত শুক্রবার সামরিক অভিযান চালানোর পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন। এর আগের দিন ইকোয়াসের একটি প্রতিনিধি দল নাইজারের জান্তা প্রধান জেনারেল আব্দুররহমান চিয়ানির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল। কিন্তু তাদের নাইজারে প্রবেশই করতে দেয়া হয়নি। এরপর ইকোয়াস জোটভুক্ত দেশের সেনা প্রধানরা সামরিক অভিযান চালানোর জন্য সেনাদের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দেন। তবে সামরিক অভিযান চালানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন জোটের সদস্য দেশগুলোর সরকার প্রধানরা এবং এ অভিযান পরিচালনার আগে তাদের ঐকমতে পৌঁছাতে হবে।

নাইজারে যদি সামরিক অভিযান চালানো হয় তাহলে এটিতে নেতৃত্ব দেবে নাইজেরিয়া। দেশটির প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবো সিনেটের কাছে অনুমোদন চেয়ে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পাঠান। তবে সিনেট সামরিক অভিযানের বদলে অন্য কোনো উপায় অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়েছে। এছাড়া ইকোয়াসের আরেক সদস্য আলজেরিয়া জানিয়েছে, তারাও সামরিক অভিযানে অংশ নেবে না।

ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নাইজারের অভ্যুত্থান নেতা জেনারেল সালিফু মুডি দুদিন আগে পার্শ্ববর্তী দেশ মালিতে যান এবং সেখানে ওয়াগনার প্রতিনিধির সঙ্গে এ ব্যাপারে বৈঠক করেন। মালির তিনটি সূত্র ও একজন ফরাসি কূটনীতিক বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বলে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম জানিয়েছে। এর মধ্যে সোফান সেন্টারের গবেষক ও সাংবাদিক ওয়াসিম নাসেরও রয়েছেন।

তিনি বলেন, নাইজারের জান্তার ওয়াগনারকে প্রয়োজন কারণ ক্ষমতা ধরে রাখতে ওয়াগনার তাদের নিশ্চয়তা দেবে।

এছাড়া নাম গোপন রাখার শর্তে পশ্চিমা এক সামরিক কর্মকর্তা জানান, তারাও শুনেছেন নাইজারের অভ্যুত্থানকারীরা মালিতে অবস্থানরত ওয়াগনার সেনাদের কাছে সহায়তা চেয়েছেন।

এদিকে, রাশিয়ার ওয়াগনার গ্রুপ আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশে এখন অবস্থান করছে। এরমধ্যে মালিতে তাদের শক্তিশালী ঘাঁটি রয়েছে। মালিতেও ২০২১ সালে সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে। এরপর ওয়াগনার গ্রুপ সেখানে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করে। ওয়াগনারের সেনারা মালিতে যাওয়ার পর দেশটি থেকে ফ্রান্সের সেনাদের বের করে দেয়া হয়।

বর্তমানে নাইজারই একমাত্র দেশ যেখানে ফ্রান্সের প্রায় দেড় হাজার ও যুক্তরাষ্ট্রের এক হাজারের বেশি সেনা রয়েছে। আর দেশটিতে অভ্যুত্থানের পর আশঙ্কা করা হচ্ছে এসব সেনাদের বের করে দেয়া হবে এবং ওয়াগনার এখানে প্রবেশ করবে। আর এই আশঙ্কা থেকে ফ্রান্স জানিয়েছে, ইকোয়াস যদি কোনো সামরিক অভিযান চালায় তাহলে এতে সমর্থন দেবে তারা। যদিও সমর্থন বলতে ফ্রান্স অভিযানে নিজ সেনাদের অন্তর্ভুক্ত করার কথা বুঝিয়েছে কিনা- সেটি নিশ্চিত নয়।

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
আইএ/ ০৬ আগস্ট ২০২৩





আরো খবর: