মিরসরাইয়ে এক রাতে একই পরিবারের তিনজনকে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনা ঘটেছে। গলা কেটে একসঙ্গে খুন করা হয়েছে মা, বাবা ও ছোট ভাইকে। বুধবার (১৩ অক্টোবর) গভীর রাতে উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মধ্যম সোনাপাহাড় গ্রামের মোস্তফা সওদাগর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় ওই পরিবারের বড় ছেলে ছাদেক হোসেনকে (৩০) আটক করা হয়েছে। নিহতরা হলেন- নতুন বাজারের ব্যবসায়ী মোস্তফা সওদাগর (৭০), তাঁর স্ত্রী জোসনা আক্তার (৫৫) ও তাঁদের ছেলে আহমদ হোসেন (২৫)।
আরও পড়ুন: ‘খুনি’ ভোলাকে সঙ্গে নিয়ে কর্ণফুলীর তীরে দখলবাণিজ্য বাস্তহারা জসিমের
পারিবারিক কলহ ও সম্পত্তির বিরোধে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। নিহতের ছোট ছেলে আলতাফ হোসেন বলেন, ভোর রাতে বড় ভাই ছাদেক হোসেন আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, বাড়িতে ডাকাত এসেছিল, বাবা-মা ও মেঝ ভাইকে জবাই করে ফেলেছে। তুই তাড়াতাড়ি আয় তাদের হাসপাতালে নিতে হবে। আমি বাড়িতে এসে দেখি বাবা, মা আর মেঝ ভাইয়ের নিথর দেহ ঘরের ভেতর পড়ে আছে।
ঘটনার সময় ঘরে বাবা, মা, বড় ভাই ও তাঁর স্ত্রী আইনুর নাহার এবং মেঝ ভাই আহম্মদ হোসেন ছিল। আমি চাকরির কারণে বারইয়ারহাট মাছের আড়তে থাকি। আমার বাবা কিছু জায়গা-জমি মেঝ ভাই আহম্মদকে দিয়েছিল। এ নিয়ে বড় ভাইয়ের সঙ্গে প্রায়সময় ঝগড়া হতো।
আলতাফ হোসেন বলেন, আগামীকাল শুক্রবার মেঝ ভাই আহম্মদের বিয়ের ফর্দ হওয়ার কথা ছিল। মো. মোস্তফা ও আহম্মদ হোসেন জোরারগঞ্জ ইউনিয়েনের নতুন বাজার এলাকায় একটি মুদি দোকান করতেন বলে জানা গেছে।
জোরারগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক জয়দ্রুত চাকমা আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ভোর ৫টায় জরুরি সেবা নাম্বার ৯৯৯ ফোন পেয়ে আমরা মোস্তফা সওদাগরের বাড়িতে গিয়ে দেখি নৃশংসভাবে তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে। সবার পিঠ, বুক, গলায় একাধিক জখম ও জবাই করা ছিল।
তিনি বলেন, এটি হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় নিহতের বড় ছেলে ছাদেক হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে। তাঁর স্ত্রী আইনুর নাহারকেও পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে চট্টগ্রাম থেকে পিবিআই আসছে। তারা এলে সুরতহাল করা হবে।
এদিকে এটি ডাকাতি বলে প্রচার করা হলেও স্থানীয়রা বলছেন, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। যোগাযোগ করা হলে জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ নুর হোসেন মামুন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে আছি। তদন্ত চলছে। পরে বিস্তারিত জানাতে পারবো।