শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৪ পূর্বাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

ঋণখেলাপিদের নির্বাচনের সুযোগ বন্ধ করতে হবে

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: সোমবার, ২০ মার্চ, ২০২৩
ঋণখেলাপিদের নির্বাচনের সুযোগ বন্ধ করতে হবে


ঢাকা, ২০ মার্চ – খেলাপিদের ঋণ পুনঃতফসিল করার সুযোগ বাতিল করে নির্বাচনে অংশ নেওয়া বন্ধ করতে হবে। নির্বাচনে অংশ নিতে আগ মুহূর্তে এ ধরনের সুবিধা নিয়ে থাকেন ঋণখেলাপিরা। রোববার প্রাকবাজেট আলোচনায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে অর্থনীতিবিদরা এ প্রস্তাব দিয়েছেন।

আলোচনায় ব্যাংক ঋণের সুদ হার সীমা তুলে নেওয়া এবং মুদ্রা বিনিময় হার আরও সহজ করার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য টাকা ছাপিয়ে ভর্তুকি দেওয়ার পদ্ধতি বাতিল করতে বলেছেন অর্থনীতিবিদরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।

প্রতিবছরের মতো প্রাকবাজেট আলোচনার আয়োজন করে অর্থ মন্ত্রণালয়। আজ ব্যবসায়ী এবং আগামীকাল প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সঙ্গে প্রাকবাজেট আলোচনায় অংশ নেবেন অর্থমন্ত্রী।

অর্থনীতিবিদরা প্রাকবাজেট আলোচনায় বলেন, আগামী অর্থবছরের (২০২৩-২৪) বাজেট হবে চ্যালেঞ্জিং। কারণ দেশের অর্থনীতির অবস্থা ভালো নয়, রাজস্ব পরিস্থিতি ভালো নয়, ডলার সংকট বিরাজমান। এছাড়া আমদানি কম হওয়ার কারণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর আদায় কম হবে। এক্ষেত্রে আগামী বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে সংযত হতে অর্থমন্ত্রীকে পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা মনে করেন, এই সংকটের মধ্যে বড় বাজেট হাতে নেওয়া হলে বাস্তবায়ন কঠিন হবে। এছাড়া বৈঠকে দেশের অর্থনীতি, আগামী বাজেট, মূল্যস্ফীতি, ডলার সংকট, আমদানি হ্রাস ও মুদ্রা বিনিয়ম হার নিয়ে আলোচনা ও সুপারিশ করেছেন অর্থনীতিবিদরা।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, অর্থনীতিবিদ প্রফেসর রেহমান সোবহান বলেছেন, ব্যাংকিং খাত নিয়ে আমাদের অনেক কিছু করা দরকার। কিন্তু কিছুই করা হচ্ছে না। তিনি বলেন, ঋণ পুনঃতফসিল করার সুযোগ বন্ধ করে আগামী নির্বাচন করতে হবে। যাতে ঋণখেলাপিরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে। নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে এ ধরনের সুযোগ নিয়ে অনেক ঋণখেলাপি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনুসুর বলেন, চলতি বাজেটে কমপক্ষে ২০ থেকে ২৪ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি হবে। আগামী বছরেও যদি বাস্তবায়নযোগ্য বাজেট প্রণয়ন করা না হয় সেখানেও বড় ধরনের ঘাটতি হবে।

এ প্রেক্ষাপটে আসন্ন বাজেটে ব্যয়ের পরিমাণ বড় ধরনের বাড়ানো উচিত হবে না। নতুন বাজেটের আকার ৭ লাখ কোটি টাকা বলা হচ্ছে। এটি অর্জন করা কঠিন হবে। এ বছর যে রাজস্ব আহরণের হার সেটি খুব বেশি বাড়ানো যাবে না। এছাড়া ৭ লাখ কোটি টাকার বাজেট প্রণয়ন করা হলে কমপক্ষে আড়াই লাখ কোটি টাকার ঘাটতি থাকবে। এই ঘাটতি পূরণ করতে হবে। এত বড় ঘাটতির অর্থায়ন সরকার কীভাবে জোগাড় করবে সেটিও ভাবতে হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে এ কাজটি করতে গেলে মূল্যস্ফীতির ওপর বড় ধরনের চাপ পড়বে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে অন্য অর্থনীতিবিদরা বলেন, এই মুহূর্তে রাজস্ব আয় বড় ধরনের বাড়ানোর সুযোগ নেই। সংস্কার করতে গেলেও আগামী দুই থেকে তিন বছর সময়ের প্রয়োজন। এটি বাজেটে আনা যাবে না। তবে রাজস্ব খাতে যেসব স্থানে ইতোপূর্বে ছাড় দিয়েছে সেগুলো কমিয়ে এনে সাশ্রয় করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

সেখানে আরও বলা হয়, ওয়েলথ ট্যাক্স সংস্কার করতে হবে। উদাহরণ দিয়ে বলা হয়, ৬০ বছর আগে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে কেনা ফ্ল্যাটের কর নির্ধারণ হচ্ছে ক্রয়মূল্যের ওপর। কিন্তু ওই ফ্ল্যাটের বর্তমান মূল্য ৩ থেকে ৫ কোটি টাকা। কিন্তু এক্ষেত্রে বর্তমান বাজার মূল্যের ওপর কর আরোপ করার পদ্ধতি চালু করতে হবে। বাজার মূল্যে ধরা না হলে রাজস্ব কম আদায় হচ্ছে, অপরদিকে বৈষম্য বাড়ছে।

কারণ আজকে একই জায়গায় অন্য একজন ফ্ল্যাট কিনতে গেলে ৫ কোটি টাকা এবং ক্রয়মূল্যের ওপর কর দিতে হচ্ছে। কিন্তু ৬০ হাজার টাকা দিয়ে ক্রেতা কিন্তু কর দিচ্ছে ৫০ বছর আগের কেনা মূল্যের ওপর। এটি বৈষম্য সৃষ্টি করছে।

আইএমএফের ঋণ নিয়েও ওই বৈঠকে আলোচনা হয়। সেখানে বলা হয় আইএমএফ ঋণের বিপরীতে যে কর বাড়ানোর বিষয়টি আসছে সেটি অর্জন করা সম্ভব নয়। অর্থনীতিবিদরা বলেন, সামগ্রিকভাবে সামষ্টিক অর্থনীতি ব্যবস্থাপনা ঝুঁকির মধ্যে আছে। সরকার মূল্যস্ফীতি কমাতে পারছে না।

কারণ টাকা ছাপাতে হচ্ছে। অন্যদিকে সুদ হার নির্দিষ্ট করে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ডলার সংকট থেকেও বেরিয়ে আসা যাচ্ছে না। ডলার সংকট যতদিন থাকবে ততদিন পণ্য মূল্য স্বাভাবিক হবে না। একটি জিনিস খেয়াল রাখতে হবে যেন সরকার টাকা ছাপিয়ে ভর্তুকি না দেয়। এখন কিন্তু তাই করা হচ্ছে। সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তা না হলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।

সূত্র: যুগান্তর
আইএ/ ২০ মার্চ ২০২৩

 

সম্পুর্ন খবরটি পড়ার জন্য এই লিঙ্কে ক্লিক করুন ::ঋণখেলাপিদের নির্বাচনের সুযোগ বন্ধ করতে হবে first appeared on DesheBideshe.



আরো খবর: