রাসেল চৌধুরী, কক্সবাজার ::
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ও কক্সবাজার সদরের রশিদ নগর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। নির্বাচনে কোনো প্রার্থী মোট প্রাপ্ত ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগ ভোট না পেলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত করে নির্বাচন কমিশন।
সেই অনুযায়ী উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতীকের এম এ মনজুর মাত্র ১৩৩৪ ভোট পেয়ে তার জামানত হারিয়েছেন। এই ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ১৮৬৫৭। মোট ভোটের এক ভাগের সংখ্যা প্রায় ২৩শ’।
অপরদিকে, রশিদ নগর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোয়াজ্জেম মোরশেদের প্রাপ্ত ভোট ৮৫৪।
জানা যায়, নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার পর পালংখালী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মনজুরকে। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে এম এ মনজুর ছাড়াও গতবারের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাহাদত হোসেন জুয়েল ও গতবারের বিদ্রোহী প্রার্থী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলী আহমদ নির্বাচন করেন।
নির্বাচনের পূর্বেই তাদের আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। নির্বাচন কমিশন থেকে প্রাপ্ত ফলাফলে স্বতন্ত্র প্রার্থী গফুর উদ্দিন চৌধুরী ঘোড়া প্রতীক নিয়ে ৪ হাজার ৭১২ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মালেক চশমা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৩৯৭৯ ভোট।
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এম এ মনজুর নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ৩৭৪ ভোট। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাকা প্রতীকের আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী পেয়েছেন ২৬৫ ভোট। তাই প্রাপ্ত ভোটের ৮ ভাগের এক ভাগ ভোটও না পাওয়ায় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এম এ মনজুরের জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে। এ উপজেলায় ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩টিতে আওয়ামী লীগ, ১টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। অপর একটি কেন্দ্র স্থগিত রয়েছে।
নগর ইউনিয়ন থেকে ৩ হাজার ৯শ’ ৯৯ নিরানব্বই ভোট পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী এমডি শাহ আলম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী হান্নান ছিদ্দিকী (মোটরসাইকেল) পেয়েছেন ৩ হাজার ৯শ’ ২৪ চব্বিশ ভোট, আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোয়াজ্জেম মোরশেদ পেয়েছে ৮৫৪ ভোট। তাই প্রাপ্ত ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগ ভোট না পাওয়ায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোয়াজ্জেম মোরশেদেরও জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। নৌকার প্রার্থী মোয়াজ্জেম ৯নং কেন্দ্রে পেয়েছেন মাত্র ০৫ ভোট। এ কেন্দ্রে তার এজেন্টই আসেননি। সবচেয়ে কম ভোট পেয়েছে ৯নং ওয়ার্ড কেন্দ্রে ৫ ভোট। কেন্দ্রভিত্তিক ৯টি ওয়ার্ডের নির্বাচনের ফলাফলে দেখা যায় এই চিত্র।
আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী নিজের ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের কারণেই আমি হেরে গেছি। তারা ষড়যন্ত্র করে নৌকাকে ডুবিয়ে দিয়েছেন। বিদ্রোহী প্রার্থীকে সরিয়ে দিতে তারা ব্যর্থ হয়েছেন।’ যদিওবা পোস্টটি তোপের মুখে পড়ে পরে সরিয়ে ফেলেন তিনি।
নৌকা প্রতীকের এমন পরাজয়ের পরপর দলীয় নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগকে দায়ী করেছেন। ১১ই নভেম্বর দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে রামু উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরমধ্যে ৪টিতে নৌকা ও ৭ টিতেই স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়।
কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন জানিয়েছেন, প্রাপ্ত ভোটের ৮ ভাগের একভাগ ভোট না পেলে প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বজল আহমেদ বাবুল বলেন, ‘নৌকার বিজয়ের লক্ষ্যে আমরা কাজ করেছি; কোনো ত্রুটি ছিল না। স্থানীয় কিছু নেতাকর্মী বিদ্রোহীর পক্ষে যাওয়াতে ক্ষতি হয়েছে। সুত্র: মানবজমিন