বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৩ পূর্বাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

উখিয়ায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে স্বপ্নের শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু!

সাঈদ মুহাম্মদ আনোয়ার :
আপডেট: বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৩

উখিয়ার ক্রীড়া প্রেমিক মানুষের আরেকটি স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের টিএন্ডটি এলাকায় উপজেলার ২ লক্ষাধিক মানুষের বহুল প্রত্যাশিত শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামটি নির্মাণ হচ্ছে।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রায় আট লাখ টাকা ব্যয়ে অতি শীঘ্রই নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার প্রক্রিয়া দিন। এই উপলক্ষে উক্ত স্থানে গত ১ নভেম্বর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম এর নামে বরাদ্দকৃত সরকারি খাস জমির উপর সাইনবোর্ড টাঙ্গানো হয়।

উখিয়া উপজেলা প্রশাসন, ভূমি অফিস ও ক্রীড়া সংস্থা সূত্রে জানা যায় সরকারি এক নম্বর খাস খতিয়ানের বিএস ৬০২৮ দাগ থেকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে সরকারি নিয়মে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের নামে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের স্বার্থে ৩ একর অকৃষি খাসজমি বন্দোবস্তের সুপারিশ করা হয়।

তৎকালীন সহকারী কমিশনার ভূমি (উখিয়া) মোঃ তাজ উদ্দিন স্বাক্ষরিত ১১-০১-২২ তারিখের প্রস্তাব পত্র জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তা অনুমোদন করে ভূমি মন্ত্রণালয় পাঠায়। ভূমি মন্ত্রণালয় অকৃষি খাস জমি দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্তের নীতিমালার আলোকে যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে ২ কোটি ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৬শত ২১টাকা সেলামি আদায় পূর্বক বন্দোবস্ত খতিয়ান সৃজনের আদেশ প্রদান করেন। সেই আলোকে ৩ একর জমি শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের নামে বরাদ্দ প্রদান করা হয়।

ইতিমধ্যে উক্ত জমিতে কার্যক্রম শুরু করে প্রশাসন, গাছ কর্তন, জঙ্গল পরিষ্কার, জমি উদ্ধার সহ প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন করে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের নামে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়।

উপজেলার ২ লক্ষাধিক তথা ক্রীড়া প্রেমিক মানুষের সরকারের কাছে দীর্ঘদিনের দাবি ছিল একটি পরিপূর্ণ নান্দনিক স্টেডিয়াম নির্মাণ। উপজেলা প্রশাসন ও ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে এই দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছিল।

উল্লেখ্য, উপজেলায় বৃহৎ পরিসরে কোন ফুটবল ও ক্রিকেট টুর্নামেন্ট সহ ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট কোন কার্যক্রম স্বাচ্ছন্দ ও দর্শক সন্তুষ্টির জন্য করার সুযোগ হত না। উখিয়া বহুমুখী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের যে খেলার মাঠটি রয়েছে সেখানে কোন ছোটখাটো স্কুল কলেজ পর্যায়ের ক্রিকেট ও ফুটবল টুর্নামেন্ট চালু করা হলে দর্শক সমাগমের বসার এবং আনন্দমনে খেলা উপভোগ করার সুযোগ ছিল না। তাছাড়া উক্ত মাঠের পূর্ণাঙ্গ স্টেডিয়াম নির্মাণ করার পরিবেশ এবং জায়গা পর্যাপ্ত নেই।

মাঠের পূর্ব পাশে আরকান সড়ক,পশ্চিম দিকে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি উত্তর ও দক্ষিণ দিকে ব্যক্তি মালিকানাধীন বহুতল বিশিষ্ট স্থাপনা। ফলে উপজেলার ক্রীড়া মোদিরা বছরের পর বছর ধরে নিরানন্দ ও আক্ষেপের বোঝা চেপে আসছে।

অবশেষে উখিয়া টেকনাফের সাংসদ শাহিন আক্তার তার স্বামী সাবেক সাংসদ আব্দুর রহমান বদি এবং উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি স্থানীয় চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সমূহে দীর্ঘ প্রচেষ্টা ও আন্তরিকতার ফলশ্রুতিতে অত্র উপজেলার মানুষের আরেকটি উল্লেখযোগ্য স্বপ্ন এবং প্রত্যাশা বাস্তবায়ন হওয়ার পথে।

সরজমিন দেখা যায় স্টেডিয়ামের নির্ধারিত উক্ত স্থানে ভূমি সংস্কারের কাজ চলছে। উখিয়া টেকনাফ প্রধান সড়কের পাশে হওয়ায় সুন্দর যোগাযোগ ব্যবস্থা, চারিদিকের মনোরম অপরূপ সৌন্দর্যের প্রাকৃতিক পরিবেশের লীলাভূমি। সেখানকার অধিবাসীরা জানিয়েছেন স্টেডিয়াম নির্মাণ হলে এলাকার আমুল পরিবর্তন হবে। তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ও অর্থনৈতিক গতিশীলতা, বেকারত্ব দূরীকরণে প্রভাব পড়বে।

একসময়ের জনপ্রিয় ফুটবল খেলোয়ার বর্তমান রাজনৈতিক নেতৃত্ব মুজিবুল হক আজাদ ও সাংবাদিক কাজী হুমায়ুন কবির বাচ্চু জানান আমরা ফুটবল খেলেছি স্বল্প পরিসরের মাঠে, এখনকার খেলোয়াড়দের জন্য এটি স্বপ্নের এবং সুখবর। স্টেডিয়াম নির্মাণ হলে এখান থেকে মেধাবী এবং দক্ষ খেলোয়াড় গড়ে উঠবে এরাই জাতীয় পর্যায়ে দেশের ক্রীড়া ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখবে।

উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক একসময়ের নামকরা নন্দিত ফুটবল ও ক্রিকেট খেলোয়াড় আব্দুল্লাহ আল মামুন শাহীন জানিয়েছেন, বিগত পাঁচ ছয় বছর ধরে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ভূমি জটিলতা দূর করতে এবং অনুমোদন, বাজেট বরাদ্দসহ নানান প্রক্রিয়া চালিয়ে সফলতার এই পর্যায়ে পৌঁছেছি। আশা করি ক্রীড়া মোদিদের চাপা বেদনা দূর হয়ে উখিয়ার ক্রীড়াঙ্গন আবারও আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেন, আমার স্বপ্ন ছিল অত্র উপজেলার
ক্রীড়াঙ্গনকে পরিপূর্ণ এবং প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া। সেই লক্ষ্যে ভূমি,যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে দীর্ঘ যোগাযোগের পর এ সফলতা আসে। শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ভূমি বন্দোবস্তির সেলামি সহ প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করেছে বলে জানা যায় । এজন্য দেশের উন্নয়নের প্রধান চালিকাশক্তি প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কে উখিয়া বাসীর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) উখিয়া সালেহ আহমদ এ ব্যাপারে বলেন, স্টেডিয়ামের জন্য ৩ একর সরকারি খাস জমি বিধি মোতাবেক বন্দোবস্ত দেওয়া হয়। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে সেখানে শেখ রাশেল মিনি স্টেডিয়ামের সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ইমরান হোসাইন সজীব এ প্রসঙ্গে বলেন, শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ প্রকল্পটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে টেন্ডারের প্রক্রিয়াদিন রয়েছে। এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে শীঘ্রই নির্মাণ যজ্ঞ শুরু হবে। সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় অত্র এলাকার ক্রীড়া জগতে আরেকটি নতুন দ্বার উন্মোচন হবে। এটি বাস্তবায়ন হলে এখানকার জনগণ বিশেষ করে ক্রীড়ামোদিরা এর সুফল ভোগ করবে।


আরো খবর: