বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩১ পূর্বাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

উখিয়ায় ৮৮ লাখ টাকার ৬১ টি মহিষ ৩০ লাখ ৮০ হাজার টাকায় নিলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক :
আপডেট: বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৩

উখিয়ার বালুখালী কাস্টমস শুল্ক গুদাম ও চেকপোস্টের অধীনস্থ বিজিবি’র জব্দ করা (সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত) ৮৮ লাখ টাকার ৬১ টি মহিষ ৩০ লাখ ৮০ হাজার টাকায় নিলামে বিক্রি করে দিলেন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। সিন্ডিকেট করে উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ মনজুরকে নিলাম ডাককারী হিসেবে দেখানো হয়।
নিলাম ডাকে অংশ নিতে যাওয়া প্রকৃত ব্যবসায়ীদের অনেকেই উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের মেম্বার ফজল কাদের ভুট্রো সিন্ডিকেটের জিম্মীদশায় পড়ে টাকা জমা করে অংশ গ্রহণ করতে পারেন নি। সংশ্লিষ্ট কাস্টমস কর্মকর্তা সুকান্ত কুমার দে এর ভুমিকা ছিল রহস্যজনক।

গত তিন দিন পরপর নিলাম ডাকের দিনক্ষণ ঘোষণা করে কাস্টমস কতৃর্পক্ষ। কিন্তু গত ১০ ও ১১ অক্টোবরের মধ্যে একদিন ডাক বাতিল করে, আরেকদিন ২টায় নিলাম ডাকের ঘোষণা দিয়ে কাস্টমস কর্মকর্তা বিকেল ৫ টায় এসে নিলাম হবে না ঘোষণা দিয়ে চলে চলে যান। তিনদিন নানা টালবাহানা চালিয়ে কাস্টমস কর্মকর্তা সুকান্ত কুমার দে নিজের পছন্দ অনুযায়ী গড়া গরু মহিষ পাচারকারী সিন্ডিকেটের সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা এম এ মনজুরকে নিলাম ডাক পাইয়ে দেয়। এতে সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হাত ছাড়া হয়ে গেলো।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নিলাম ডাকে প্রায় সময় উখিয়া উপজেলারপালংখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মেম্বার ফজল কাদের ভুট্টোর দাপটে নিলামে অংশ গ্রহণ করতে পারেনা স্থানীয় প্রকৃত ব্যবসায়ীরা। জিম্মী করে নিলাম ডাক নিজের অনুকুলে এবং নিজের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ভাগিয়ে নেয়। এতে প্রকৃত ব্যবসায়ী ও পেশাদার নিলাম ডাককারীরা যেমনি নিলাম ডাকে অংশ নিতে পারেন না। যার ফলে জব্দ মালামালের ন্যায্য মুল্য পাওয়া থেকে বারবার বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। লাভবান হচ্ছে স্থানীয় কাস্টমস কর্মকর্তা আর সিন্ডিকেটভুক্ত নিলাম ডাককারীরা।

এতে করে একদিকে সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে অন্যদিকে দূরদূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসে হতাশ হয়ে ফিরে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, স্থানীয় এক পাচারকারী সিন্ডিকেট মিয়ানমারের সিন্ডিকেটের সাথে যোগসাজশ করে সীমান্তের চোরাই পথ দিয়ে মহিষ নিয়ে আসছিলো।
এমতাবস্থায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)র চৌকস আভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করে গত ৯ সেপ্টেম্বর (সোমবার) মহিষগুলো জব্দ করে বিওপিতে নিয়ে আসে। পরে জব্দ তালিকা করে বালুখালী ঘাট কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে।

স্থানীয়রা জানান, সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে আসা মহিষগুলো পালংখালীর একটি সিন্ডিকেট ও জনৈক আওয়ামী লীগ নেতা এম. মনজুর তার আত্মীয়স্বজনদের দাবী করে নিলাম কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি করার প্রচেষ্টা চালায় এবং বাধা সৃষ্টি করার জন্য বিভিন্ন স্থানে তদবির শুরু করে।

এদিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মহিষগুলো স্থানীয়দের নয় বলে নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, মিয়ানমার সীমান্ত থেকে চোরাই পথে আসার সময় ৬১ মহিষ জব্দ করা হয়।

নিলামে অংশ নিতে আসা স্থানীয় ব্যবসায়ী নাসির উদ্দীন বলেন, সারাদিনের অন্যান্য কাজ বাদ দিয়ে নিলামের খবরে অংশ নিতে নির্দিষ্ট সময়ে আগে ছুটে আসি। কিন্তু স্থানীয় কাস্টমস কর্মকর্তা ও সিন্ডিকেট সদস্যদের চাপের মুখে নিলামে অংশ নিতে পারিনি। যা খুবই বিরক্তিকর ও দুর্ভাগ্যজনক।

এ ব্যাপারে বালুখালী ঘাট কাস্টমস কর্মকর্তা সুকান্ত কুমার দে বলেন, ১০ ও ১১ অক্টোবর নিলাম হওয়ার কথা ছিলো, কিন্তু উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ও সরকারি দলে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের অনুরোধ অনুযায়ী ১০ ও ১১ অক্টোবর নিলাম বাদ দিয়ে ১২ অক্টোবর যথাযথ নিয়মে নিলাম সম্পন্ন করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, পানির দামে ৬১ টি মহিষ নিলাম ডাকের বিষয়টি নিয়ে সচেতন মহলে নানা মিশ্র প্রতিক্রিয়া সহ উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি উঠেছে।


আরো খবর: