ইমরান আল মাহমুদ:
ভাষাগত দক্ষতায় পিছিয়ে রয়েছে উখিয়া উপজেলা। উপজেলার ৩১টি এমপিও ও নন-এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নেই কম্পিউটার ক্লাব কিংবা বিতর্ক প্রতিযোগিতার ক্লাবও। যার ফলে পাঠ্যবইয়ের বাইরের জ্ঞানার্জন থেকে অনেকটা পিছিয়ে এ উপজেলার শিক্ষার্থীরা। তবে উপজেলা পরিষদে ভাষা চর্চা ক্লাব ও বিতর্ক প্রতিযোগিতার ক্লাব রয়েছে বলে জানান একাডেমিক সুপারভাইজার মো. বদরুল আলম।
শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মাসে উপজেলার কয়েকটা স্কুল মাদ্রাসা ঘুরে দেখা যায়,শিক্ষার্থীদের ভাষাগত দক্ষতা উন্নয়নে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই। তবে অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকারি উদ্যোগে স্থাপিত কম্পিউটার ল্যাব রয়েছে। যার সবকটা’ই বঙ্গবন্ধু কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল এর নামে স্থাপন করা হয়েছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত হওয়া এইচএসসি’র ফলাফল অনুযায়ী নুরুল ইসলাম চৌধুরী টেকনিক্যাল (বিএম) স্কুল এন্ড কলেজ এ ৮৯জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৮৮জন কৃতকার্য হয়। পাশের হার ৯৮ দশমিক ৮৮শতাংশ। কোনো পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পায়নি। অন্যদিকে,উখিয়া উপজেলার একমাত্র মহিলা কলেজ বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজ এ ৬৩১জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৫৩৪জন কৃতকার্য হয়েছে। পাশের হার ছিলো ৮৪দশমিক ৬৩শতাংশ ও জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮জন পরীক্ষার্থী।
উখিয়া কলেজ থেকে ৫৯১জন পরীক্ষা দিয়ে ৪৬৯জন পাশ করে। পাশের হার ছিলো ৭৯ দশমিক ৩৬শতাংশ। তবে কোনো পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পায়নি। একই কলেজের বি.এম শাখা থেকে ৮৫জন পরীক্ষা দিয়ে ৮৩জন উত্তীর্ণ হয়। পাশের হার ছিলো ৯৭.৬৫ শতাংশ।
২০১৭ সালে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে নিপীড়নের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা ঢলের পর থেকে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পজুড়ে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা তাদের সেবা দিয়ে আসছে। যার ফলে কক্সবাজার সহ উখিয়া ও টেকনাফে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা নিয়মিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন সহ শরনার্থী সংস্থা,আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা, বিশ্ব খাদ্য সংস্থা সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রতিনিধিবৃন্দ তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। তাদের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি,কম্পিউটার শিক্ষার মানোন্নয়নে ক্লাব গঠন করে উখিয়া ও টেকনাফের শিক্ষার্থীদের ভাষা ক্লাব বা কম্পিউটার ক্লাব গঠনের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন গবেষকরা।
মাঠ পর্যায়ে জরিপে দেখা যায়,শিক্ষার্থীরা কারিগরী শিক্ষা বোর্ড ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের নিবন্ধনে পরিচালিত কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে অধিকাংশই চর্চা করেনা। অন্যদিকে, ইংরেজি আন্তর্জাতিক ভাষা হলেও নেই কোনো চর্চা কেন্দ্র। নেই বাংলা ভাষা চর্চার কেন্দ্রও।
শিক্ষার্থীদের মতে,ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব বা কম্পিউটার ক্লাব স্থাপন করলে শিক্ষার্থীরা অনেক দক্ষ হয়ে দেশের সম্পদে পরিণত হয়ে বিশ্বে নেতৃত্ব দিবে এমন প্রত্যাশা তাদের।
এ ব্যাপারে উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মো. বদরুল আলম বলেন,”উখিয়ার ৩১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব ও কম্পিউটার ক্লাব নেই। তবে উপজেলা পর্যায়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতার ক্লাব ও ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব রয়েছে। এসব ক্লাবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ভাষা চর্চা করতে পারবে। বিভিন্ন বিষয়ের উপর বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে নিজেদের প্রতিভা বিকশিত করতে পারবে। উপজেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার মানোন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। কম্পিউটার ক্লাবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সফটওয়্যারের ব্যবহার ও বিশ্বকে হাতের মুঠোয় এনে দ্রুত সময়ে সবকিছু জানতে পারবে।”