তেহরান, ১৭ জুলাই – ৬৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি তাপমাত্রা নিয়ে সর্বোচ্চ দৈনিক তাপমাত্রার রেকর্ড করেছে ইরান। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ বুশেহেরের আসালুয়েহ জেলার পার্সিয়ান গালফ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জলবায়ু পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইউএস স্টর্মওয়াচের কর্মকর্তা কলিন ম্যাকার্থি এক টুইটবার্তায় নিশ্চিত করেছেন এ তথ্য।
টুইটবার্তায় এই জলবায়ু বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘পার্সিয়ান গালফ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকার তাপমাত্রা আজ দুপুরে ছিল ১৫২ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৬৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস)। বুধবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে এই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। মানুষ-উদ্ভিদ ও অন্যান্য প্রাণীদের জন্য এই পরিমাণ তাপ সহ্যের অতীত।’
কোনো এলাকার তাপমাত্রা পরিমাপের ক্ষেত্রে ওই এলাকার বাতাসের তাপ, জলীয় বাস্পের পরিমাণ ও পরিবেশ সংক্রান্ত অন্যান্য চলকের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করেন জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা; তারপর ‘হিট ইনডেক্স’ নামের একটি সূচকে তা প্রকাশ করা হয়। বাতাসের তাপ ও আর্দ্রতা— দু’টিই পরিমাপ করা হয় এ সূচক দিয়ে।
ইরানে এখন গ্রীষ্মকাল চলছে। হিট ইনডেক্সের তথ্য অনুসারে, দেশটির অভ্যন্তরীণ ভূভাগের তাপমাত্রা এবং পারস্য উপসাগর থেকে বয়ে আসা অতি উষ্ণ জলীয় বাষ্প ফলাফল আজকের এই ৬৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা।
অতিরিক্ত তাপমাত্রা বা তাপদাহ মানবদেহে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। আন্তর্জাতিক টিকা সহায়তা জোট গ্যাভির মতে, তাপদাহের সময় কোনো ব্যক্তি যদি পর্যাপ্ত পানি পান না করেন, সেক্ষেত্রে ঘাম ও মূত্রের ফলে তার শরীর পানিশূন্য হয়ে যায় এবং দীর্ঘ সময় পানি পান থেকে বিরত থাকলে রক্তে জলীয়ভাব কমে গিয়ে তা ভারী হয়ে ওঠে এবং এতে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়াসহ স্ট্রোক ও হৃৎযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
এছাড়াও টানা তাপপ্রবাহের ফলে শরীরে বিদ্যমান বিভিন্ন শারীরিক সমস্যাও বেড়ে যায় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রকৃতিতে কার্বন ডাই অক্সাইডসহ অন্যান্য গ্রিনহাউস গ্যাসের ব্যাপক নিঃসরণ, অতিমাত্রায় জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো, বনজঙ্গল ধ্বংস করা এবং শিল্প কারখানার পরিমাণ দিন দিন বাড়তে থাকায় ক্রমশ অস্বাভাবিক উষ্ণ হয়ে উঠছে পৃথিবী।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় জলবায়ুবিদদের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ সম্প্রতি এক প্রতিবেদেন জানিয়েছে, চলতি বছর জুলাই মাসেই বিশ্বের ইতিহাসে উষ্ণতম বছর হতে যাচ্ছে ২০২৩ সাল। জলবায়ুবিদরা বলেছেন, বিশ্বে সর্বোচ্চ উষ্ণ যেসব দিনের অতীত রেকর্ড রয়েছে— সেসবের মসধ্যে অন্তত ১০টি দিনের রেকর্ড ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে চলতি বছর।
সূত্র: ঢাকা পোস্ট
আইএ/ ১৭ জুলাই ২০২৩