ইসলামবাদ, ১০ জানুয়ারি – কারাবন্দি পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে আরও অন্তত ১২টি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। গত বছরের ৯ মে রাওয়ালপিন্ডি পুলিশ জেনারেল হেডকোয়ার্টারে (জিএইচকিউ) হামলাসহ সহিংসতার জন্য এসব মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, অভিযোগপত্র অনুসারে, সাবেক পিটিআই চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বিভিন্ন রাষ্ট্রের প্রধানদের কাছ থেকে প্রাপ্ত ১০৮টি উপহারের মধ্যে ৫৮টি জমা দেননি।
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক চেয়ারম্যান ইমরান খান বর্তমানে আদিয়ালা জেলে আছেন। মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) রাওয়ালপিন্ডির সন্ত্রাসবিরোধী আদালত (এটিসি) ইমরান খানকে দুই দিনের পুলিশি হেফাজতে (ফিজিক্যাল রিমান্ড) নেওয়ার আবেদন মঞ্জুর করেছেন। তবে তার জিজ্ঞাসাবাদ আদিয়ালা কারাগারেই করতে বলা হয়েছে।
এদিকে, বিচারক তোশাখানা মামলার পরবর্তী কার্যক্রম ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি করেন ও একই তারিখে ১২ জন সাক্ষীকে তলব করেন। অভিযোগ তোলা হয়েছে, তোশাখানার নিয়মকানুন উপেক্ষা করে বুশরা বিবি সুন্দর ও দামি গয়নাগুলো রেখেছিলেন।
এ ঘটনার সাক্ষীদের তালিকায় ইমরানের সাবেক সামরিক সচিবসহ দুই ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা রয়েছেন। এমনকি, সাবেক ব্যক্তিগত উপদেষ্টা শোহাইব আব্বাসিও ইমরানের বিপক্ষে সাক্ষ্য দেবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে, তোশাখানা ও আল কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার পরবর্তী জামিন চেয়ে ইমরান খানের করা আবেদনটি মঙ্গলবার খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। পাকিস্তানের জবাবদিহি আদালতের বিচারপতি মোহাম্মদ বশির জামিন নামঞ্জুর করেন।
১৯ কোটি পাউন্ডের দুর্নীতিসংক্রান্ত আল কাদির ট্রাস্ট মামলাটির কার্যক্রম ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে। একই দিনে ইমরান খান ও বুশরা বিবিকে এ মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।
জেলে বসে সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইমরান খান বলেন, ক্ষমতাবান পক্ষের লাগাম টেনে ধরেছিলাম বলেই আমাকে ভুগতে হচ্ছে।
তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় গত বছরের ৯ মে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে নাটকীয়ভাবে গ্রেফতার করা হয় ইমরান খানকে। এ ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে পাকিস্তান, সৃষ্টি হয় চরম অস্থিরতা।
অস্থিরতা টানা চারদিন অব্যাহত ছিল ও পিটিআই কর্মী-সমর্থকরা পাকিস্তানের বহু সামরিক ও রাষ্ট্রিয় স্থাপনায় হামলা চালায়। তাছাড়া আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দমনের মুখে কমপক্ষে ১০ বিক্ষোভকারীর মৃত্যুও হয়।
তাছাড়া পাকিস্তানের ইতিহাসে সেবারই প্রথমবারের মতো বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে রাওয়ালপিন্ডিতে দেশটির সেনা সদর দপ্তরে (জিএইচকিউ) প্রবেশ করে ও লাহোরে কর্পস কমান্ডারের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। পরে সামরিক বাহিনী ৯ মেকে ‘কালো দিবস’ হিসেবে অভিহিত করে এবং সেনা আইনের অধীনে বিক্ষোভকারীদের বিচার করার সিদ্ধান্ত নেয়।
সূত্র: জাগো নিউজ
আইএ/ ১০ জানুয়ারি ২০২৪