মস্কো, ২৫ মে – দুই বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। কিন্তু এবার কী তিনি পিছু হটার ইঙ্গিত দিলেন? চারটি সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যুদ্ধ থামাতে রাজি হয়েছেন পুতিন। ওই সূত্রগুলো জানিয়েছে, বর্তমান ফ্রন্ট লাইনকে মেনে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে একটি যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে বিবেচনা করতে রাজি আছেন পুতিন। তবে কিয়েভ এবং পশ্চিমারা এই প্রস্তাবে রাজি না হলে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে নিজের জেদে অটল থাকতে পারেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
পুতিন-ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছে, শান্তি আলোচনার পথে বাধা দিচ্ছে পশ্চিমারা। আর এ নিয়ে নিজের হতাশা প্রকাশ করেছেন পুতিন। এ ছাড়া আলোচনায় বসতে রাজি না হওয়ায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ওপরও হতাশ রুশ প্রেসিডেন্ট। পুতিনের সঙ্গে এর আগে কাজ করা একজন সিনিয়র রাশিয়ান সূত্র জানিয়েছে, যতদিন লাগে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পুতিনের আপত্তি নেই, কিন্তু যুদ্ধবিরতি জন্যও প্রস্তুত আছেন তিনি।
যুদ্ধ থামাতে চাওয়ার কথায় কতখানি ভিত্তি রয়েছে, তা নিশ্চিত হতে সবমিলিয়ে পাঁচ জনের সঙ্গে কথা বলেছে রয়টার্স। ওই ব্যক্তিরা পুতিনের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে সম্পৃক্ত। তবে পঞ্চম সূত্রটি বর্তমান ফ্রন্টলাইনে যুদ্ধ থামানোর বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। যদিও এ ব্যাপারে পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ক্রেমলিন প্রধান বারবার বলেছেন নিজেদের লক্ষ্য অর্জনে রাশিয়া আলোচনার জন্য প্রস্তুত আছে। তার দেশ ‘অভ্যন্তরীণ যুদ্ধ’ চায় না বলেও মন্তব্য করেন পেসকভ।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে রুশ বাহিনী অনেক অঞ্চল দখল করেছে। এর মধ্যে পুতিন গেল মার্চে পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর মন্ত্রিসভা থেকে সের্গেই শোইগুকে হটিয়ে দেন তিনি। তার জায়গায় অর্থনীতিবিদ আন্দ্রেই বেলোসভকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিছু পশ্চিমা সামরিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বিশ্বাস, দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের সঙ্গে রাশিয়ার অর্থনীতিকে খাপ খাওয়াতেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তবে রাশিয়ার নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে নিয়ে তারা সরাসরি কোনো মন্তব্য করেনি।
ক্রেমলিনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কথাবার্তার সঙ্গে পরিচিত দুটি সূত্র জানিয়েছে, পুতিন মনে করেন এখন পর্যন্ত ইউক্রেনে যা অর্জন হয়েছে, তা রাশিয়া জনগণের কাছে জয় বলে চালিয়ে দেওয়া সম্ভব। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে বড় স্থল এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তবে এই যুদ্ধের কারণে যে জনপ্রিয়তা কমেছে তা পুতিনও বুঝতে পেরেছেন, তাই আপাতত থামতে চাইছেন তিনি।
সূত্র: কালবেলা
আইএ/ ২৫ মে ২০২৪