শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:১৬ পূর্বাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

আসামি না হলেও হাতছাড়া হচ্ছে সালাম মুর্শেদীর বাড়ি

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: বুধবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪


ঢাকা, ০৭ ফেব্রুয়ারি – অনিয়মের মাধ্যমে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট ও খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে সরকারি সম্পত্তি আত্মসাতের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সাবেক দুই চেয়ারম্যানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সালাম মুর্শেদীর যে বাড়িটিকে ঘিরে এ মামলা, তাতে আসামির তালিকায় নাম না উঠলেও বাড়িটি হারাতে যাচ্ছেন এ সংসদ সদস্য।

অভিযোগ, ক্ষমতার অপব্যবহার করে পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও অবমুক্তকরণ ছাড়াই জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে মিথ্যা রেকর্ডপত্র তৈরি এবং পরবর্তীতে হস্তান্তর অনুমতি ও নামজারি অনুমোদন করার মাধ্যমে রাজধানীর গুলশান-২ এর ১০৪ নম্বর সড়কের ২৭/বি নম্বর বাড়িটির মালিক হয়ে যান সালাম মুর্শেদী।

তবে, জাল দলিলে বাড়ির মালিক বনে গেলেও মামলার আসামি হননি তিনি! জাল নথিপত্র তৈরির বিষয়টি তিনি জানতেন না—এমন অদ্ভুত যুক্তি দেখিয়ে তাকে আসামি করা হয়নি বলে দাবি করেছেন দুদকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা।

ওই কর্মকর্তার আরও দাবি, মামলার আসামি না হলেও বাড়ি হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন সংসদ সদস্য সালাম মুর্শেদী। দুদকের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে তার বিরুদ্ধে সরাসরি কোনো মন্তব্য না করা হলেও বাড়িটি উদ্ধারের জন্য ইতোমধ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

গত মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) মামলা দায়েরের পর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে দুদক সচিবের দপ্তর থেকে।

সংস্থাটির সচিব মো. মাহবুব হোসেনের সই করা চিঠিটিতে বলা হয়েছে, সম্পত্তির মালিকানা জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে বলে অনুসন্ধানকালে প্রমাণিত হয়েছে। জাল কাগজ তৈরি করে জালিয়াতির মাধ্যমে পরিত্যক্ত সম্পত্তির মালিকানা পরিবর্তন করে ব্যক্তিমালিকানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে আব্দুস সালাম মুর্শেদীর বাড়ি (বাড়ি নং-২৭/বি, রোড নং-১০৪, গুলশান-২) সংক্রান্ত বিষয়টি আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তা উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণের জন্য কমিশন থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই সিদ্ধান্তের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে চিঠিতে।

এ বিষয়ে দুদকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অভিযোগ অনুসন্ধানকালে রেকর্ডপত্র দ্বারা সমর্থিত না হওয়ায় জাল-জালিয়াতির সঙ্গে আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও অপর মালিক মোহাম্মদ আব্দুল মঈনের সম্পৃক্ততার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি। মামলার তদন্তকালে বিষয়গুলো আরও খতিয়ে দেখতে হবে। তবে, সম্পত্তির মালিকানা জাল কাগজের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে, এটা প্রমাণিত।

তিনি আরও বলেন, জাল কাগজেই পরিত্যক্ত সম্পত্তির মালিকানা পরিবর্তন করে ব্যক্তিমালিকানায় স্থানান্তর করা হয়েছে। বিষয়টি আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পরিত্যক্ত সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়ারও সুপারিশ করে অনুসন্ধান টিম। এর আগেও ২০২২ সালে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদন এবং ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদের পিএ কমিটির অডিট রিপোর্টে জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ার পর সরকারকে ওই সম্পত্তি উদ্ধারের সুপারিশ করা হয়েছিল।

মঙ্গলবার বিকেলে সরকারি সম্পত্তি আত্মসাতের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির উপ-পরিচালক ইয়াছির আরাফাত বাদি হয়ে এ সংক্রান্ত মামলা দায়ের করেন। মামলার বিষয়টি দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন নিশ্চিত করেছেন।

মামলার ১১ জন আসামি হলেন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন খাদেম ও প্রকৌশলী এম আজিজুল হক, সাবেক সদস্য (এস্টেট) লে. কর্নেল (অব.) এম নুরুল হক, সাবেক পরিচালক আবদুর রহমান ভূঁঞা, সাবেক উপ-পরিচালক (এস্টেট) মো. আজহারুল ইসলাম, রাজউকের সহকারী পরিচালক (নিরীক্ষা ও বাজেট) শাহ মো. সদরুল আলম ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক মো. হাবিব উল্লাহ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক সহকারী সচিব আবদুস সোবহান, সাবেক শাখা সহকারী মো. মাহবুবুল হক এবং কক্সবাজারের রামুর বাসিন্দা মীর মোহাম্মদ হাসান ও তার ভাই মীর মো. নুরুল আফছার।

সূত্র: আরটিভি নিউজ
আইএ/ ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪


আরো খবর: